বাসন্তী পুজোর বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে ছিল পূজার্চনা, আরতি, ধর্মসভা, সংগীত অনুষ্ঠান, সিঁদুর খেলা ও অন্নপ্রসাদ আস্বাদন । পুরোহিত রুবেল চক্রবর্তী তিথি অনুসারে পূজার যাবতীয় শাস্ত্রীয় কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করেন।

সুদূর প্রবাসে এ যেন বসন্তের মধ্যেও শরতের আমেজ! আর এই আমেজ একমাত্র আনে আদি দূর্গাপুজো। আদি দুর্গাপুজোই হল বাসন্তী পুজো। স্মরণাতীত কাল থেকে এই পুজো হয়ে আসছে। কিন্তু কালে কালে শারদীয়ার বাড়বাড়ন্তে, বসন্তিকার আরাধনা অনেকটাই ম্লান। পুরাণ অনুযায়ী, সমাধি নামক বৈশ্যের সঙ্গে মিলে রাজ্য-হারানো রাজা সুরথ বসন্তকালে ঋষি মেধসের আশ্রমে মূর্তি গড়ে দেবী দুর্গার আরাধনা করেন, যা পরে বাসন্তী পূজা নামে প্রসিদ্ধ হয়। বাংলা চৈত্রমাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথিতে হয় বাসন্তী পুজো। বাসন্তী পুজোকেই বাঙালি হিন্দুদের আসল দুর্গাপুজো বলে মনে করা হয়। শাস্ত্র অনুসারে এই বছর দেবীর আসা যাওয়া দুটোই হাতিতে। দেবীর গজ বাহন শাস্ত্রমতে অত্যন্ত শুভ।
বাসন্তী পুজো ঘিরে শারদোৎসবের আমেজ ছিল এবসিকন শহরে ।আবালবৃদ্ধবনিতার বাহারি সাজ ও নয়নাভিরাম পোশাক-আশাকে রাধাকৃষ্ণ মন্দির প্রাঙ্গণ হয়ে উঠেছিল উৎসবের রঙে রঙিন। প্রবাসী হিন্দুদের সব পথ এসে যেন মিশেছিল মন্দির প্রাঙ্গণে। তারা সারাক্ষণ মেতে ছিলেন আনন্দযজ্ঞে।

আটলান্টিক কাউন্টির প্রবাসী বাংগালি হিন্দুরা মেতে ছিলেন শ্রী শ্রী বাসন্তী পুজোর হরেক আয়োজনে। বাসন্তী পুজোর রঙে রঙিন হয়ে উঠেছিল এবসিকন শহর । সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের মনে- প্রাণে ও ঘরে ঘরে উৎসাহ- উদ্দীপনা, আনন্দ- উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো । পুজোর ক’টা দিন ঢাক-ঢোল, কাঁসর আর উলুধ্বনিতে মুখরিত ছিল মন্দির প্রাঙ্গণ।
এবসিকন শহরে বাসন্তী পূজা আয়োজনের মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয় যে, সুদূর প্রবাসেও বাঙালি হিন্দুরা তার আদি দুর্গাপুজোকে কোনওদিনই পুরোপুরি ভুলে যায়নি। সে এখনও দুর্গাপুজোর আদিরূপ বাসন্তী পুজোর আয়োজন করে।
বাসন্তী পুজোর এই কয়েক দিন প্রবাসী হিন্দুরা মেতে ছিল অনাবিল আনন্দে। আনন্দলোকের মঙ্গলালোকে অন্যরকম অনুভূতি আর ভিন্নতর ভালোবাসায় উদ্বেলিত হোক সকল প্রবাসী হিন্দুর মন-প্রাণ, এই ছিল সবার অন্তরের কামনা। বাসন্তী পুজোর আয়োজকদের পক্ষে লিটন ধর ,সুনীল দাশ ও বরুন তালুকদার বাসন্তী পুজো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।